মিলাদের মধ্যে কিয়ামের মাস‌আলা

মিলাদের মধ্যে কিয়ামের মাস‌আলা
The matter of Qiyam among Milads


The matter of Qiyam among Milads



কিয়াম শব্দের আভিধানিক অর্থ দাঁড়ানো। আর সামাজিকতায় কিয়াম বলতে বোঝায় কারো আগমনে দাঁড়ানো। আর মিলাদের ক্ষেত্রে কিয়াম বলতে বোঝায় কোন মজলিসে সমস্বরে দরূদ পাঠ করার সাথে সাথে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উক্ত মজলিসে হাজির হয়ে গেছেন এই মর্মে সবাই দাঁড়িয়ে যাওয়া এবং দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দুরূদ পাঠ করা।

মিলাদের মধ্যে কিয়ামের মাস‌আলা
✓ প্রচলিত মিলাদ কুরআন, হাদীস, ইজমা, কিয়াস দ্বারা সাব্যস্ত নয় এবং খাইরূল কুরুনের যুগেও তার কোন অস্তিত্ব ছিল না, তখন মিলাদের মধ্যে কিয়ামের বৈধ হওয়ার তো কোন প্রশ্নই আসে না।


উপরোন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জীবদ্দশায় নিজের জন্য কিয়াম করাকে অপছন্দ করতেন। সাহাবায়ে কিরামগন তাঁর প্রতি অপরিসিম মুহাব্বত, ভালোবাসা থাকা সত্বেও তিনি যখন স্বশরীরে কোথাও উপস্থিত হতেন তখন তাঁকে দেখতে পেয়েও তারা দাঁড়াতেন না। সুতরাং যখন তিনি তাঁর জীবদ্দশায়ই তাঁর সম্মানে দাঁড়ানোকে অপছন্দ করতেন তাহলে তার অনুপস্থিতিতে এমন কাজ কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়। রাসূলের অপছন্দনীয় বিষয়কে রাসূলের জন্য সম্মানের বিষয় নির্ধারণ করা উচিত নয়।


✓ হাদীস শরীফে আছে- হযরত আবূ হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে আমার কবরের নিকট এসে আমার উপর দুরূদ পাঠ করবে আমি তা সরাসরি শুনব, আর যে দূরে থেকে আমার উপর দুরূদ পাঠ করবে তা আমার নিকট পৌঁছানো হবে। (শুআবুল ঈমান হা.নং-১৫৮৩)


✓ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- আল্লাহর কতক ফিরিশতা রয়েছেন, যারা গোটা পৃথিবীতে বিচরণ করতে থাকেন এবং উম্মতের সালাম আমার নিকট পেশ করেন। (দারেমী, হা.নং-২৭৭৪) তার অর্থ হলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো মজলিসে হাজির হতে পারেন না, তিনার কাছে পৃথিবীর সকল দরূদ সালাম পৌঁছে দেয়া হয়।অর্থাৎ ঐ কিয়ামটাই অনর্থক এবং অজ্ঞতার বর্হিঃপ্রকাশ। 


✓ কুরআন এবং হাদীসের অসংখ্য দলীল দ্বারা একথা প্রমাণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাযির-নাযির নন। একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই হাযির-নাযির বা সর্বত্র বিরাজমান। সুতরাং ঐ কিয়ামটাই এবং বিশ্বাসটাই আপনার অকাট্য ঈমানের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। 


✓ হাফেয সাখাবী রহ. তার ফাতওয়া গ্রন্থে উল্লেখ করেন যে, এজাতীয় মিলাদ সর্বোত্তম তিন যুগের সালফে সালিহীনের কারো থেকে সাব্যস্ত নেই। বরং এর পরবর্তী যুগে সূচনা হয়েছে। (সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ: ১/৩৬২)

✓ আল্লামা আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ মিসরী মালেকী রহ. বলেন, চার মাযহাবের উলামায়ে কিরাম এজাতীয় প্রচলিত মিলাদ নিন্দণীয় হওয়ার ক্ষেত্রে ঐক্যমত পোষণ করেন। (আল ক্বওলুল মু’তামাদ, পৃষ্ঠা: ১৬২)


No comments

Powered by Blogger.