ভূমি নদীতে ভেঙে যাওয়া ও জেগে ওঠা সংক্রান্ত নিয়মকানুন
ভূমি নদীতে ভেঙে যাওয়া ও জেগে ওঠা সংক্রান্ত নিয়মকানুন
১৯৯৪ সনের ১৫ নম্বর আইন বলে সাবেক ৮৬ ধারা সংশোধন করে তদস্থলে নিম্নরূপ সংশোধনী ৮৬ ধারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে। ১৩ জুলাই, ১৯৯৪ রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে তা আইনে পরিণত হয়েছে। নদী ভাঙন ও নদীতে জেগে ওঠা জমি সংক্রান্ত প্রচলিত ভূমি আইন সম্পর্কে সাধারণ মানুষতো দূরের কথা, অগ্রসর নাগরিকদেরও প্রায় অজ্ঞ বা সচেতন নন।
সিকস্তি, পয়স্তি
✓ কোনো ভূমি ভেঙে নদী বা সাগর গর্ভে বিলীন হয়ে গেলে তাকে সিকস্তি (Diluvion) বলে।
✓ সাগর বা নদীতে কোনো ভূমি জেগে উঠলে বা ভেঙে যাওয়া ভূমি পুনরায় জেগে উঠলে এরূপ ভূমিকে পয়স্তি বলে।
নদী ভাঙনের প্রচলিত ভূমি আইন বেশ জটিল। নদ-নদীর ভাঙাগড়া প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত ভূমির অধিকার বিষয়ক সমস্যা মূলত তিন প্রকার
✓ প্রায় অদৃশ্যভাবে ক্রমান্বয়ে ভেঙে যাওয়া জমি একইভাবে ক্রমান্বয়ে একই স্থানে বা অন্য কোথাও তীর ভূমির সংলগ্ন হয়ে জেগে ওঠা,
✓ দ্রুত ভেঙে যাওয়া জমি পুনরায় দ্রুত একই স্থানে জেগে ওঠা
✓ নদীতে পলি পড়ে বা ভেঙে যাওয়া জমি নদীর মধ্যবর্তী কোনো স্থানে চর আকারে জেগে ওঠা।
এসব সমস্যার সমাধান কল্পে উল্লেখযোগ্য প্রথম আইন হলো ‘দি বেঙ্গল এ্যালুভিয়ন অ্যান্ড ডিলিউভিয়ন রেজুলেশন, ১৮২৫ (রেজুলেশন ১১/১৮২৫); যা পরে বেঙ্গল অ্যাক্ট ৪/১৮৬৪ ও বেঙ্গল অ্যাক্ট ৫/১৯২০ দ্বারা সম্পূরিত হয়েছিল।
এই আইনের ৪ নম্বর ধারায় ১ম অনুচ্ছেদে বলা হয় যেকোনো প্রকার নদীতীরস্থ জমি সংলগ্ন হয়ে ক্রমান্বয়ে যদি কোনো জমি নদী থেকে জেগে ওঠে বা পয়স্তি হয়, তাহলে পরিমাণ আনুপাতিক কর/খাজনা প্রদানের দায়িত্ব সাপেক্ষে উহা সংলগ্ন জমির প্রজার সম্পত্তি বলে গণ্য হবে।
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে বলা হয় যে নদীর হঠাৎ গতি পরিবর্তন বা প্রচণ্ড তোড়ের ফলে যদি কোনো জমি খণ্ডিত হয়ে অন্য কোনো মালিকের জমির সাথে যুক্ত হয় বা কোনো জমি সিকস্তি হয়ে দ্রুত আবার জেগে ওঠে এবং এভাবে খণ্ডিত বা জেগে ওঠা জমিকে ভেঙে যাওয়া জমিরই পুনরুত্থান বলে শনাক্ত করা যায়। তাহলে ভেঙে যাওয়া জমি যার ছিল, তিনি জেগে ওঠা জমিটি পাবেন।
তদ্রুপ ক্ষেত্রে ১ম অনুচ্ছেদে বলা হয় যে, নদীর মধ্যবর্তী কোথাও দ্বীপ আকারে জেগে ওঠা চরের মালিক হবে সরকার, যদি নদী তলস্থ ভূমির কোনো ব্যক্তি-মালিক না থাকে। মধ্যবর্তী চর ও তার পয়স্তিভিত্তিক বৃদ্ধি সংক্রান্ত সরকারের অধিকার ও প্রজার দাবি সুস্পষ্ট বিধানে আবদ্ধ করবার জন্য ‘দি বেঙ্গল এ্যালুভিয়ন (এ্যামেগুমেন্ট) অ্যাক্ট, ১৮৬৮ (বেঙ্গল অ্যাক্ট-৪/১৮৬৮) প্রণীত হয়।
No comments