তাবীজ, ঝাড়-ফুঁক'এর শরিয়তের বিধান এবং মাসআলা

Islamic culture and knowledge


✓ তাবীজ এবং ঝাড় ফুঁক 

আমাদের দেশে কেউ কেউ তো ঝাড়-ফুঁক, তাবীজ-কবজকে একেবারে অস্বীকার করে এবং এ সকল কাজকে না-জায়িয, হারাম এমনকি শিরক ও মনে করে। আবার কেউ কেউ তাবীজ-কবজে এতটাই বিশ্বাসী যে, তাবীজ-কবজকে স্বয়ংক্রিয় ও নিজস্ব কার্যক্ষমতার অধিকারী মনে করে এবং প্রতিটি কাজেই তাদের একটি তাবীজের প্রয়োজন হয়।


আসলে কোনটিই সঠিক নয়। তাবীজ-কবজকে উসীলা মনে করে কুরআন হাদীসে বর্ণিত নিয়ম অনুসারে আমল করাই হল একমাত্র সহীহ ত্বরীকা। শরী‘আতের দৃষ্টিতে রোগ হলে যেমন ঔষধ ব্যবহার করা বৈধ, তেমনি রোগ-বালাই ও বিভিন্ন সমস্যায় দু’আ-দুরূদের ব্যবহারও শরী‘আত-সম্মত। কুরআনের আয়াত, হাদীসে বর্ণিত বিভিন্ন দু’আ ও আল্লাহর নাম দ্বারা ঝাড়-ফুঁক ও তাবীজ ব্যবহার করা সর্বসম্মতিক্রমে জায়িয। (সূত্র: মিরকাতুল মাফাতীহ: পৃ: ৮/৩৬) 

তাবীজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে এ বিশ্বাস রাখতে হবে যে, এগুলোর নিজস্ব কোন কার্যক্ষমতা নেই, এগুলো মাধ্যম মাত্র। কুফর ও শিরক মিশ্রিত নকশা বা শব্দ অথবা অর্থ বুঝে আসেনা এমন শব্দ দ্বারা তৈরী তাবীজ ব্যবহার করা নাজায়িয। (সূত্র: তাকমিলাতু ফতহিল মুলহিম: পৃ: ৪/৩২৫ হাদীস নং ৫৬৮৮) 


হাদীস দ্বারা প্রমাণিত আছে যে, হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামগন ঝাড়-ফুক করতেন। বাকী যে সকল হাদীসে তাবীজ-কবজকে শিরক বলা হয়েছে, তার ক্ষেত্র হল শুধু ঐ সকল তাবীজ যাতে শিরকী ও কুফরী কথা রয়েছে। যেমনটি ছিল জাহিলী যুগের তাবীজ-কবজে। 

অথবা যে ক্ষেত্রে তাবীজ-কবজকেই কার্যকরী বিশ্বাস করা হয়। তাবীজ কে মাধ্যম হিসেবে বিশ্বাস করে নয়। এমন বিশ্বাস নিয়ে এ্যালোপ্যথিক, হোমিও প্যথিক চিকিৎসা করানোও শিরকের অন্তর্ভুক্ত। শুধু তাবীজ-কবজ নয়।

✓ একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদীস 

عن عمرو بن شعيب، عن أبيه، عن جده، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم، قال: إذا فزع أحدكم في النوم فليقل: أعوذ بكلمات الله التامات من غضبه وعقابه وشر عباده، ومن همزات الشياطين وأن يحضرون فإنها لن تضره. فكان عبد الله بن عمرو، يلقنها من بلغ من ولده، ومن لم يبلغ منهم كتبها في صك ثم علقها في عنقه.

হযরত ‘আমর ইবনে শু‘আইব স্বীয় পিতা এবং তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ববলেন
“যখন তোমাদের কেউ ঘুমের মধ্যে ভয় পায়, সে যেন এই দোয়া বলে,

عوذ بكلمات الله التامات من غضبه وعقابه وشر عباده، ومن همزات الشياطين وأن يحضرون 
তাহলে সেই ভয় কিছুতেই তার কোনরূপ ক্ষতি করবেনা।

আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আমর (রাঃ) এই দু’আ স্বীয় সন্তানদের মধ্যে যে প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছে তাকে মুখে বলাতেন এবং যে প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি এ দু’আ কোন কাগজে লিখে দিতেন, অত:পর তা তার গলায় ঝুলিয়ে দিতেন। 
(সূত্র: তিরমিযী শরীফ হাদীস নং ৩৫২৮)


No comments

Powered by Blogger.