রোযার গুরুত্বপূর্ণ মাসাইল ।। জেনে রাখা প্রয়োজন



Important aspects of fasting. Need to know



আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, হে মুমিন সকল! তোমাদের উপর রমাযানের রোযা ফরয করা হলো, যেমনিভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরয করা হয়েছিল। যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পারো। (সূরা বাকারা-১৮৩)
হুজুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সহিত সওয়াবের আশায় রমাযান শরীফের রোযা রাখে, (অন্য বর্ণনায়) ঈমানের সহিত সওয়াবের আশায় তারাবীহের নামায পড়ে, তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (বুখারী শরীফ: হা: নং ১৯০১)

∆ রোযার গুরুত্বপূর্ণ মাসাইল 
রোযার মাসায়েল কম বেশি সকলেরই জানা কিন্তু অনেক সময় স্বরণ থাকে না, কিংবা মানুষ ভুলে যায়,তাই সকলের স্বরণার্থে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাসাইল এখানে উল্লেখ করা হয়েছে, আশা করি উপকারে আসবে। 
(১) রমাযান মাসে কেউ যদি পাগল হয়ে যায় তাহলে তার রোযা মাফ হয়ে যায়। তবে পুরো মাসের কোন অংশে সুস্থ হলে পূর্বের রোযাগুলোর কাযা করতে হবে।(আল বাহরুর রায়েক: ২/৫০৭)
(২) হস্তমৈথুন করলে রোযা ভেঙ্গে যায় এবং তার কাযা আদায় করা জরুরী। এটা জঘন্য পাপকার্য। হাদীসে এইরূপ ব্যক্তির উপর লানত করা হয়েছে। (দুররে মুখতার: ২/৩৯৯)


(৩) যদি রোযা অবস্থায় দাঁত দিয়ে রক্ত বের হয়ে কণ্ঠনালীতে পৌঁছে যায় এবং তা পরিমাণে কম হয়, তাহলে রোযা নষ্ট হবে না। আর যদি রক্ত থুথুর সমান বা থুথু থেকে বেশী হয় তাহলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। অবশ্যই সেই রোযার কাযা করতে হবে। (দুররে মুখতার: ২/৩৯৬)
(৪) বাচ্চাকে দুধ পান করালে রোযার কোন ক্ষতি হয় না। কিন্তু নামায অবস্থায় দুধ পান করালে নামায ভেঙ্গে যায়। (দুররে মুখতার: ২/৩৭১)


(৫) সফরে যদি কষ্ট হয় তাহলে রোযা না রাখা জায়িয আছে বরং না রাখা উত্তম। আর সফরে কষ্ট না হলে রোযা রাখাই হল মুস্তাহাব। তবে রোযা রেখে ভাঙ্গা ঠিক নয়। কেউ যদি ভেঙ্গে ফেলে তাহলে কাফফারা আসবে কি না এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। যদিও গ্রহণযোগ্য মত হল যে, এই অবস্থায় কাফফারা ওয়াজিব হয় না। (আহসানুল ফাতাওয়া ৪:৪৪)


(৬) কেউ রোযা রাখার পর মারাত্মক অসুস্থ হয়ে গেলে অথবা পূর্বের রোগ বেড়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা হলে রোযা ভাঙ্গা জায়িয আছে। পরবর্তীতে কাযা করতে হবে। একান্ত কাযা করার শক্তি না পেলে উক্ত রোযার ফিদিয়া দিতে হবে অর্থাৎ, প্রত্যেক রোযার বদলে একজন গরীবকে দু’বেলা খাওয়াতে হবে বা পোনে দু’সের আটা কিংবা তার মূল্য গরীবকে দিতে হবে। (দুররে মুখতার: ২/৪২২)


(৭) রমাযানের প্রত্যেক দিনেই ঐ দিনের রোযার নিয়ত করা জরুরী। একদিনের নিয়ত পুরো মাসের রোযার জন্য যথেষ্ট নয়। যদি কেউ রোযার নিয়ত ব্যতীত এমনিতেই সারা দিন না খেয়ে থাকে, তাহলে এটা রোযা বলে গন্য হবে না। (রদ্দুল মুহতার: ২/৩৭৭)


(৮) সুবহে সাদিকের পর খাওয়া পান করা জায়িয নেই। আযান হোক বা না হোক। লোক মুখে যে প্রচলিত রয়েছে যে, সুবহে সাদিকের পরেও আযান পর্যন্ত খাওয়া যায় তা সম্পূর্ণ ভুল। (রদ্দুল মুহতার:২/৪১৯)


(৯) রোযা অবস্থায় গোসল করলে রোযার কোন সমস্যা হয় না। তবে কুলী করার সময় গড়গড়া করতে পারবে না এবং নাকে পানি দেয়ার সময় নাকের মধ্যে জোরে পানি  টানা যাবে না। (দুররে মুখতার: ২/৪১৯)


(১০) রমাযান মাসের দিনে বা রাতে কেউ যদি বেহুঁশ হয়ে যায় এবং তা যদি কয়েকদিন বা অবশিষ্ট পুরো মাস পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে প্রথম যে দিন বেহুঁশ হয়েছে ঐ দিন বাদ দিয়ে বাকী দিনগুলোর রোযার কাযা করতে হবে। রোযা অবস্থায় কাউকে রক্ত দিলে রোযা ভাংবে না। যদি রক্তদাতার শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশংকা না থাকে। (রদ্দুল মুহতার: ২/৪১৯)



No comments

Powered by Blogger.