আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার এবং শরিয়তের ব্যাখ্যা

Use of modern instruments and interpretation of Shariah



মানব কল্যাণে রচিত আধুনিক যন্ত্রপাতির মধ্যে বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত যন্ত্র। এই ডিভাইসটি অনেকের কাছে প্রয়োজনের চেয়েও বেশি আছে, কারো কাছে নেই এমন কিন্তু নেই। অতিপ্রলোভন কারি এই ডিভাইসটি এখন আলোচনার কেন্দ্রে।


প্রয়োজন অনুযায়ী আপনি অবশ্যই এটি ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এর জন্য মানতে হবে কিছু আদেশ নিষেধ, যেটা শরিয়তের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ সেটা করা যাবে না। তাই জেনে নিন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো। 


✓ মোবাইলের স্ক্রিনে কোন প্রাণীর ছবি ওয়ালপেপার হিসেবে দেওয়া যাবে না। কারণ এর দ্বারা ছবির প্রদর্শনী হয়, শরী‘আতে প্রাণীর ছবি প্রকাশ ও প্রদর্শন নিষেধ করা হয়েছে।‌  
✓ মোবাইলের স্ক্রিনে আল্লাহ তা‘আলার নামের ক্যালিগ্রাফি, কোরআনের কোন আয়াত কিংবা দোয়া দরুদ ইত্যাদি রাখা যাবে না। কারণ এভাবে ক্ষেত্র বিশেষে এগুলোর সাথে বেয়াদবী হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে।


✓ আযান, যিকির, তিলাওয়াত ও দু‘আ কালামকে রিংটোন বা ওয়েলকাম টিউন হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না। কারণ এসব অতীব মর্যাদাপূর্ণ বিষয়, এগুলোর ব্যবহার একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকে উদ্দেশ্য করেই হবে। মোবাইলের রিং টোন দিয়ে কোনো মহৎ কাজ হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না।
✓ মিউজিক, গান-বাদ্যের রিংটোন অথবা ওয়েলকাম টিউন ব্যবহার করা যাবে না। কারণ এসব শোনা ও শোনানো সবই কবীরাহ গুনাহ।


✓ ঘণ্টার আওয়াজ, হর্নের শব্দ, গাড়ীর আওয়াজ, পাখির আওয়াজ, এ ধরনের স্বাভাবিক কোন উৎসকে, যা মিউজিক বলে মনে হয় না যায় না, সেগুলোকেই রিংটোন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
✓ নামাযের সময়, বিশ্রামের সময়, অন্য কোন ব্যস্ততার সময় গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে, এই সময় গুলোতে একেবারেই দরকার ছাড়া কল না দেওয়াই উত্তম।


✓ একান্ত অপারগতা ছাড়া কাউকে মিসড্ কল দেওয়া যাবে না। এতে মানুষকে বিরক্ত করা হয় যা অত্যন্ত পাপের কাজ।
✓ কেউ ফোন করলে অবশ্যই রিসিভ করতে হবে, পরিচিত হোক বা অপরিচিত হোক। একান্ত অপারগতা থাকলে ভিন্ন কথা।


✓ ঘুমানোর পূর্বে মোবাইল ফোনের রিংটোন বন্ধ করে ঘুমাবেন, পাশের লোকের ক্ষতি হতেও পারে। প্রয়োজনে মোবাইল ফোন বন্ধ করে ঘুমাবেন। যা নিজের নিরবিচ্ছিন্ন ঘুমের জন্য‌ও কল্যাণকর। 
✓ সালাম দিয়ে কথা শুরু করবে। এটাই নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাত, হ্যালো দিয়ে নয়। 


✓ সালামের পর কোন সমস্যা না থাকলে নিজের পরিচয় দিয়ে কথা বলা শুরু করবেন। পরিচিত হলে স্বাভাবিক আলাপচারিতা চালিয়ে যাবে। 
✓ মসজিদে প্রবেশ করার পূর্বেই মোবাইল ফোন বন্ধ করে দিবে। যাতে নামাযের মধ্যে রিংটোন বেজে উঠে মুসল্লীদের একাগ্রতা নষ্ট না করে। কোন কারণে যদি নামাযের পূর্বে মোবাইল ফোন বন্ধ না করে থাকে আর নামায অবস্থায় বেজে উঠে, তখন সম্ভব হলে এক হাত দ্বারা বন্ধ করে দিবে। দুহাত ব্যবহার করবে না। কারণ দুহাত ব্যবহার করা আমলে কাসীর হওয়ায় নামায নষ্ট হয়ে যায়।


এই হলো মোটামুটি কিছু আদব কায়দা। এছাড়াও আরো অনেক কিছু রয়েছে যা আপনাকে ভদ্র হতে দেখাবে, মানুষের সাথে ভালো আচরণ করতে শেখাবে। যতটুকু সম্ভব মোবাইল ফোন সংযত হয়ে ব্যবহার করা। মোবাইল প্রয়োজনের জন্য ব্যবহার করতে হবে, মোবাইলকে প্রয়োজন বানানো যাবেনা। 


No comments

Powered by Blogger.