হুদাইবিয়ার সন্ধিপত্রে কাফেরদের অযৌক্তিক কিছু শর্ত

 

some-unreasonable-terms-infidels-treaty-hudaybiyyah


নিম্মে বর্ণিত আয়াত হুদাইবিয়ার সন্ধির পরে নাযিল হয়। হুদাইবিয়ার সন্ধিকে প্রকাশ্য বিজয় বলে ঘোষণা করা হয়। যদিও বাহ্যিক ভাবে বিজয়ের কোন চিহ্ন তাতে বিদ্যমান ছিল না। যে কারণে হযরত উমর ফারুক রাযি. সহ অন্যান্য সাহাবীগণ এ সন্ধির ব্যাপারে খুবই পেরেশান ছিলেন। 


مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ ؕ وَ الَّذِیْنَ مَعَهٗۤ اَشِدَّآءُ عَلَی الْكُفَّارِ رُحَمَآءُ بَیْنَهُمْ


হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা‘আলার রাসূল এবং তার সাথীগণ কাফেরদের বিরুদ্ধে কঠোর এবং নিজেদেরে মাঝে পরস্পর সহানুভূতিশীল। সুরা ফাতহ:২৯


পরবর্তীতে আল্লাহ তা‘আলা এ সন্ধির অনেক হেকমত প্রকাশ করলেন। সুলহে হুদাইবিয়ার পরপরই খাইবার বিজয় হয়ে গেলো। প্রচুর গনীমত মুসলমানদের হাতে এসে এতদিনের আর্থিক সমস্যার সমাধান হয়ে গেল। অপর দিকে ইয়াহুদী জাতি সম্পূর্ণ পর্যুদস্ত হলো এবং সময়ের ব্যবধানে মক্কা বিজয় হয়ে চরম ও পরম লক্ষ্য অর্জিত হলো। 


★ হুদাইবিয়ার সন্ধিপত্র প্রস্তুতকালে কাফেরদের অযৌক্তিক শর্ত

সুলাহনামা (সন্ধিপত্র) প্রস্তুতলগ্নে মক্কায় কাফেরদের পক্ষ থেকে অনেকগুলো অবাঞ্ছিত কার্য ও অযৌক্তিক শর্ত উত্থাপিত হয়েছিল। তার মধ্যে তাদের দু‘একটি উল্লেখযোগ্য কার্যকলাপ হলো সুলাহানামার শুরুতে হযরত আলী রাযি. ‘বিসমিল্লাহ’ শরীফ লিখেছিলেন। 


কিন্তু কাফেররা তা মানলো না। তারা বরং বলে বসলো-রহমান কে? তাকে আমরা চিনি না। সুতরাং আমাদের নিয়ম মতো “বিসমিকা আল্লাহুম্মা” লিখতে হবে। মহানবী সাঃ এর নির্দেশে তাই লেখা হলো। তারপর হযরত আলী রাযি. লিখলেন-এটা একটি চুক্তিনামা, যা মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কাবাসীদের সাথে সম্পাদন করলেন। 


কাফেররা এতে আপত্তি করে বসলো যে, মুহাম্মাদ'কে যদি আমারা আল্লাহর রাসূল মেনেই নেই, তাহলে তার সাথে আমাদের বিবাদ কিসের? তাহলে তো সমস্ত ঝগড়ার অবসান হয়ে যায়। সুতরাং উক্ত রাসূলুল্লাহ শব্দের স্থলে ‘মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ’ লিখতে হবে। 


এ দাবি নিয়ে তারা খুবই পীড়াপীড়ি ও বাড়াবাড়ি করতে লাগলো। তখন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশে তাদের দাবি মেনে নিয়ে ‘রাসূলুল্লাহ’ শব্দটি মুছে ফেলা হলো এবং তদস্থলে “বিন আব্দুল্লাহ” লেখা হলো। দ্বীনের স্বার্থে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিনয় ও নম্রতার এই প্রকাশ আল্লাহ তা‘আলার দরবারে সমাদৃত হলো। 


আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বিধান [যে ব্যাক্তি আল্লাহর জন্য বিনয়ী হয়, আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে উচ্চ মর্যাদা দান করেন] অনুযায়ী এ আয়াতের মধ্যে বিশেষভাবে মহানবী-এর নামের সাথে রাসূলুল্লাহ শব্দ নাযিল করে চিরস্থায়ী করে দিলেন-যা কিয়ামত পর্যন্ত কোটি কোটি মানুষ কর্তৃক লিখিত ও পঠিত হতে থাকবে। 

No comments

Powered by Blogger.