যে কারণে দু‘আ কবুল হয়না

that-why-dua-not-accepted


আল্লাহ তাআলা সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা। আমরা সবাই তার সৃষ্টি। আমরা সবাই তার দয়ার মুখাপেক্ষী। তিনি যদি না চান, তাহলে এক ফোঁটা পানিও কারো গলা দিয়ে নামার ক্ষমতা নেই। আমরা আমাদের সুখ সমৃদ্ধি সব‌ই তার অশেষ করুনা আর মেহেরবাণীতে পেয়ে থাকি।


অনেক সময় আমাদের জীবন অনেক দুঃখ দুঃসময় নেমে আসে, যা আমাদের কর্মের ফল। আমরা আল্লাহর কাছে চাইতে পারিনা বলেই আমাদের অনেক দোয়া কবুল হয় না। আল্লাহর কাছে চাইলে আল্লাহ সবকিছু দেন, তবে বিশেষ কিছু ব্যক্তির দোয়া আল্লাহ্ কবুল করেন না।


দোয়া কবুল হয় না যেসব কারণে 

১. শিরকে লিপ্ত হওয়ার কারণে আল্লাহর দয়া থেকে বঞ্চিত হতে হয়। যে ব্যক্তি জানা অজানায় আল্লাহ তাআলার সাথে শিরক করে থাকে আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন না, এ জন্য উক্ত ব্যক্তিকে তাওবা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে দোয়া করতে হবে, ইনশাআল্লাহ তার দোয়া কবুল হবে। 


২. কোনো মুসলমানের সাথে কলহ বিবাদে লিপ্ত থাকলে আল্লাহ তাআলা তাঁর দোয়া কবুল করেন না, কেননা কোনো মুসলমান ব্যক্তিকে কষ্ট দেওয়া হারাম, তাই কারণে অকারণে যাই হোক না কেন কলহ বিবাদ করা যাবে না, মন থেকে বিবাদ বিভক্তি ভুলে দোয়া করতে হবে। 


৩. মদ্যপানে অভ্যস্ত থাকা ব্যক্তির দোয়া কবুল হয় না। কেননা ইসলামী শাসনতন্ত্র অনুসারে মদ পান করা হারাম, এটি অনেক পাপের জন্য দায়ী, তাইতো মদ্যপানে অভ্যস্ত ব্যক্তির দোয়া কবুল হ‌ওয়ার পূর্ব শর্ত হলো আল্লাহর দরবারে তাওবা করে মন থেকে বিশুদ্ধ হয়ে দোয়া করতে হবে। 


৪. পিতা-মাতার নাফরমানিতে লিপ্ত থাকা সন্তানের দোয়া আল্লাহ দরবারে কবুল হয় না। পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য পালন করা ইসলামের পরম নিয়ম, এ নিময় ভঙ্গ কারি আল্লাহর দয়া মায়া থেকে বঞ্চিত হবে, এটি দোয়া কবুল হ‌ওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা। 


৫. খাদ্য ও লেবাস-পোশাক হারাম হওয়ার কারণে দোয়া কবুল হয় না। হারাম উপার্জন কারি আল্লাহর কাছে দোয়া করলে তা গ্রহণ হবে না। হারাম সে কোনো পন্থায় উপার্জন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আল্লাহর কাছে গরীব মানুষ অত্যন্ত প্রিয়, আল্লাহ গরীবের দোয়া কবুল করেন। 


৬. কোন গুনাহের বিষয়ে দু‘আ করা এক ধরনের গুনাহ, এটি দোয়া কবুল না হওয়ার অন্যতম কারণ। কোনো হারাম বস্তু কিংবা বিষয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আল্লাহ সবসময় বান্দার নেক ভালো উদ্যোগ উদ্দেশ্য গুলো কবুল করে থাকেন।


৭. দু‘আ করে কবুল হওয়ার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করা। অর্থাৎ একথা বলা যে, আমি অনেক দু‘আ করলাম কিন্তু কবুল হতে দেখলাম না। আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করে না কেন, একথা ভুলেও বলা যাবেনা, কেননা আল্লাহ তাআলা আপনার দোয়া কবুল করতে বাধ্য নয়।


আল্লাহ আপনার উপর দয়া করলেই আপনার দোয়া কবুল হবে, তবে আপনি আমি আমরা গুনাহগার বান্দা হিসেবে আল্লাহর দরবারে যতটুকু সম্ভব আকুতি মিনতি করে দোয়া করেই যাবো, এক্ষেত্রে কোনো প্রকারেই প্রশ্ন করা যাবেনা। মনে রাখবেন, আল্লাহ সব সময় মেহেরবান। 


হাদীস শরীফে এসেছে, বান্দার দু‘আ সর্বদা কবুল হতে থাকে যতক্ষণ সে কোন গুনাহ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার দু‘আ না করে বা তাড়াহুড়া না করে। (মুসলিম, হাদীস: ২৭৩৫)


দু‘আ কবুল হওয়ার অর্থ হচ্ছে, দুনিয়াতেই প্রার্থিত বিষয় লাভ করা বা দু‘আর সওয়াব কিয়ামত দিবসের জন্য সঞ্চিত রাখা অথবা কোনো মুসীবত দূর করা অথবা গুনাহ মাফ করে দেওয়া। (সুনানে তিরমিযী, হাদীস:৩৩৮১, ৩৬৭৭)


No comments

Powered by Blogger.