আসহাবে ফীল'এর সংঘঠিত স্থল
আসহাবে ফীলের ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল মিনা ও মুজদালিফার মাঝখানে মুহাসসার নামক স্থানে। মুসলিম ও আবু দাউদ শরীফের বর্ণনায় রয়েছে, ইমাম জাফর সাদেক রহ. তার পিতা ইমাম মুহাম্মাদ বাকের রহ. হতে বর্ণনা করেন, তিনি হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা. হতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিদায় হজ্জের যে বিবরণ উদ্ধৃত করেছেন,
তাতে তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মুযদালিফা হতে মিনার দিকে চললেন, তখন মুহাসসার উপত্যকায় চলার গতি খুব বাড়িয়ে দিলেন। বিশিষ্ট হাদীসবিশারদ ইমাম নববী রহ. এ হাদীসের ব্যাখ্যায় লিখেছেন, হস্তিওয়ালাদের উপর আযাব নাযিলের ঘটনা এই জায়গায় সংঘটিত হয়েছিল।
এ জন্য গযবের এই স্থানটিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুব দ্রুত অতিক্রম করেছিলেন। সুতরাং এই স্থান এভাবে দ্রুত অতিক্রম করে যাওয়াই সুন্নত। আল্লাহ তা‘আলা হাবশীদের এই শাস্তি দেওয়ার সাথে সাথে তিন-চার বছরের মধ্যে ইয়ামান হতে তাদের শাসন ক্ষমতারও অবসান ঘটান।
হস্তিবাহিনীর এ ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরে ইয়ামানের হাবশীদের শক্তি ও ক্ষমতা সম্পূর্ণ নিঃশেষ হয়ে যায়। দিকে দিকে ইয়ামানী সরদাররা তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করতে থাকে। এক পর্যায়ে ইয়ামানী নেতৃবর্গ হাবশীদের মোকাবেলায় পারস্য-সম্রাটের নিকট সামরিক সাহায্যের আবেদন করে।
ফলে ৫৭৫ খ্রিস্টাব্দে পারস্যের মাত্র এক হাজার সৈন্য ছয়টি যুদ্ধ জাহাজ সহ ইয়ামানে আগমন করে এবং সেখান থেকে হাবশীদের পরাস্ত করে তাদের শাসনের পরিসমাপ্তি ঘটায়। হস্তিবাহিনীর এই অভূতপূর্ব ঘটনা সমগ্র আরবের এবং সারাবিশ্বের মানুষের অন্তরে কুরাইশদের মাহত্ম্য আরো বাড়িয়ে দেয়। এরপর থেকে সবাই এক বাক্যে স্বীকার করতে থাকে যে কুরাইশগন আল্লাহর বিশ্বস্ত বান্দা।
No comments