সুখ |

HAPPINESS | সুখ |


A N I |
ANOWAR NURUL ISLAM |
HAPPINESS | সুখ |


■ প্রারম্ভিকা ।
কাউকে পাওয়া যাবে না যে সুখী হতে চায় না। অনেকেই ভাবেন- অর্থকড়ি, শিক্ষা-দীক্ষা, বিবাহ, সন্তান-সন্ততি, পরিবার, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রতিপত্তি মানুষকে সুখী করতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, এসব অর্জন আসলে মানুষকে সুখী করতে পারে না। লাখ লাখ মানুষের জন্য প্রকৃত সুখ যেন সোনার হরিণ।



■ অনেক মনোবিজ্ঞানী বলেন___
সুখ হল জেনেটিক বা বংশানুগতিসম্বন্ধীয়। আবার কিছু বিজ্ঞানী তাদের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের সূত্র ধরে বলেছেন, তারা মস্তিষ্কের এমন কিছু অংশ নির্ণয় করেছেন যেখান থেকে সুখ নিঃসৃত হয়। মিশিগানের হোপ কলেজের সাইকোলজি বিভাগের প্রফেসর ডেভিড মায়ার বলেন, জেনেটিক বা বংশানুগতিসম্বন্ধীয় তত্ত্বের ভিত্তিতে যে যাই বলুন না কেন, সুখ অনেকাংশেই মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি অনুভূতি। এটি অনেকটা মানুষের কোলেস্টেরল লেভেলের মতো, যা জেনেটিক্যালি প্রভাবান্বিত, আবার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানুষের আচার-আচরণ বা লাইফস্টাইল এবং খাদ্যাভ্যাস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

সুখকে মাঝে মাঝে এক ধরনের স্বার্থিক উদ্দেশ্য বলে মনে করা হয়। মানুষের কী আছে- তার ওপর সুখ নির্ভর করে না। মানুষ কী ভাবে বা কিভাবে ভাবে- তার ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে সুখ। যার যা আছে বা যে অবস্থায় আছে তার জন্য শোকরিয়া জানিয়ে যদি দিন শুরু করা হয়- তাতে সুখ আসবে। মানুষ আজ যা ভাবছে তার ওপর ভিত্তি করে তার ভবিষ্যতের সুখ গড়ে উঠবে। সুতরাং কাজ-কর্ম ও চিন্তাধারায় পজিটিভ অ্যাপ্রোচ নিয়ে শুরু করলে জীবনে সুফল আসবে। আত্মবিশ্বাসে বিশ্বাসী, মর্যাদাবান, হৃদয়বান, জ্ঞানী-গুণী, সৎ মানুষ সাধারণত সব সময় সুখী হয়। যারা শুধু নিতে চায়, দিতে জানে না বা চায় না, তারা সুখী হয় না।



গাড়ি, বাড়ি, অলঙ্কার, কাপড়চোপড় বা ধন-দৌলতের মতো সুখও এক ধরনের পণ্য। এসব প্রাপ্তি মানুষকে সাময়িকভাবে কিছুটা সুখ দিতে পারলেও প্রকৃত প্রস্তাবে স্থায়ী সুখ প্রাপ্তির জন্য এসব অর্জন বড় ভূমিকা পালন করে না বলে সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী বা চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা মনে করেন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, সুখ বৈষয়িক বা জাগতিক কোনো ব্যাপার নয়। সুখ বহুলাংশে মনস্তাত্ত্বিক বা আধ্যাত্মিক ব্যাপার।


■ প্রত্যেক অভিজ্ঞ মানুষই বলে থাকেন____
সুখপ্রাপ্তির জন্য শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই। পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষরাও দিনের ২৪ ঘণ্টা সুখী হয় না বা থাকেন না। সুখী মানুষের জীবনেও হতাশা, দুঃখ-কষ্ট আসে। পার্থক্য হল সুখী মানুষরা হতাশা, দুঃখ-কষ্টকে সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে। অন্যরা তা পারেন না। আমাদের শরীর শুধু রক্ত-মাংসে গড়া কোনো জড়বস্তু নয়। আমাদের আত্মা আছে যা শরীরের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আবেগ-অনুভূতি আমাদের শরীরের ওপর প্রচণ্ড প্রভাব ফেলে থাকে। বস্তুজগতে কাম, ক্রোধ, লোভ-লালসা, মোহ, মাৎসর্য, ঈর্ষা ও প্রতিহিংসা আমাদের দুঃখ, কষ্ট, অশান্তি, অসুখ ও ধ্বংসের মূল কারণ। মানুষ তার সততা, সৎকর্ম ও অটল সৃষ্টিকর্তাপ্রীতি দ্বারা উল্লিখিত বদগুণ থেকে নিজেকে দূরে রেখে এই পার্থিব জীবনেই পরম স্বর্গসুখের স্বাদ লাভ করতে পারে।


■ অবশেষে____
সৃষ্টিকর্তা মানুষকে নিয়মতান্ত্রিক স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের আদেশ দেন। আর সেই আদেশ-বিধিনিষেধ মেনে চললে জীবনে শান্তি আসবে, সুখ আসবে। সৃষ্টিকর্তার ওপর যার বিশ্বাস যত দৃঢ়, বস্তু জগতে তিনি তত সুখী।সুস্থ, সুন্দর ও সুখী জীবনযাপনের জন্য প্রকৃতিতে হাজারও নিয়ামত রয়েছে। জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে এবং বিশ্বাস প্রক্রিয়ার প্রভাবে আমরা দিন দিন প্রাকৃতিক জীবনযাত্রা থেকে সরে এসে কৃত্রিম, অসুস্থ, ক্ষতিকর ও অসুখী জীবনধারণের প্রতি ঝুঁকে পড়েছি। প্রাকৃতিক জীবনযাত্রা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারণে আজ বিশ্বজুড়ে লাখো-কোটি মানুষের শরীর-মন-আত্মার ওপর প্রচণ্ড নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। অথচ প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করার মাধ্যমে আমরা অতি সহজে সুস্থ, সুন্দর ও সুখী জীবনের অধিকারী হতে পারি।


THANK YOU ALL.
A N I .



No comments

Powered by Blogger.