টিপু সুলতান

THE PRIDE | A MEGA ARTICLE |



A N I .
16 SEPTEMBER 2019 THE PRIDE | A MEGA ARTICLE |


■ পরিচিতি ।
টিপু সুলতান (জন্ম: 20 নভেম্বর, 1750 - মৃত্যু: 4 মে, 1799) ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের মহীশূর রাজ্যের শাসনকর্তা। তিনি একজন বীর যোদ্ধা ছিলেন। ইংরেজদের বিরুদ্ধে তিনি বীরত্ব সহকারে যুদ্ধ করেন। তিনি তাঁর শৌর্যবীর্যের কারণে শের-ই-মহীশূর (মহীশূরের বাঘ) নামে পরিচিত ছিলেন। ভারতের স্বাধীনতামাকীতার জন্য ভারতের বীরপুত্র বলা হয়। তিনি বিশ্বের প্রথম রকেট আর্টিলারি এবং বিভিন্ন অস্ত্র তৈরি করেছিল ত্ত ফতোয়া মুজাহিদীন লিখেছেন|

দক্ষিণ ভারতের মহীশূর রাজ্যের শাসক ছিলেন টিপু সুলতান ৷ পিতা হায়দার আলী মহীশূর রাজ্যের সেনাপতি ছিলেন ৷ নেপোলিয়ন বোনাপার্ট তার মিত্র ছিল এবং ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধে সাহায্য করেছিল। শ্রীরঙ্গপত্তনম গ্রামে কাবেরী নদীর একটি ব-দ্বীপে নির্মিত একটি দূর্গ থেকে রাজ্য শাসন করতেন৷ বর্তমানে শ্রীরঙ্গপত্তনম গ্রাম দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের মান্ডিয়া জেলার অন্তর্গত৷ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সঙ্গে যুদ্ধে 1799 খ্রিস্টাব্দে নিহত হন। টিপুর এক সেনাপতি মীর সাদিক বিশ্বাসঘাতকতা করে ব্রিটিশদের সঙ্গে হাত মেলান৷ পরে তার পরিবারের লোকজনকে ভেলোরের দূর্গে বন্দী করে রাখে ব্রিটিশ শাসকরা৷

■ THE SWORD OF TIPU SULTAN |
দ্য সোর্ড অব টিপু সুলতান (ইংরেজি: The Sword of Tipu Sultan) হল একটি ভারতীয় ঐতিহাসিক নাটক যা 1990  সালে ডিডি ন্যাশনালে প্রথম সম্প্রচারিত হয়। ভগবান গিদওয়ানির একই নামের উপর ভিত্তি করে নির্মিত এই নাটকটিতে মহীশুরের স্বনামধন্য শাসক টিপু সুলতানের জীবন ও সময়কে চিত্রায়িত করা হয়েছে।
ধারাবাহিকটি বহু বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হয় যার অন্যতম হল 1990 সালে নাটকটির সেটে সংঘটিত একটি দুর্ঘটনাজনিত বিরাট অগ্নিকাণ্ড; মহীশুরের নির্মিত প্রিমিয়ার স্টুডিও নামক নাটকের সেটের ওই অগ্নিকাণ্ড স্টুডিওর বড় অংশ জ্বালিয়ে দেয় এবং 62 জন ব্যক্তির প্রাণনাশ করে।
ধারাবাহিকটি এর অভিনয় ও জাঁকজমকের জন্য ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছিল। এছাড়াও এর জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ ছিল এর কাহিনী, যা উপন্যাসের নামে লিখিত হলেও তার অধিকাংশই ছিল লেখকের করা ঐতিহাসিক গবেষণানির্ভর, যিনি পেশাজীবনে একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন।

“যদি তোমরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করো, তবে কাপড় পরার অধিকার পাবে।” – হিন্দু নারীদের প্রতি টিপু সুলতানের এই আহবানের পেছনে রয়েছে এক অন্যায় সামাজিক প্রথার ইতিহাস। সেটি জানার আগে টিপু সুলতান সম্পর্কে কিছু জেনে নেই।

ইউরোপে তখন চলছে ফরাসি বীর নেপোলিয়নের বিজয়ের ধারা। তাই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের ভয় ছিলো, টিপু সুলতান নেপোলিয়নের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতকে ব্রিটিশমুক্ত করবেন কিনা। আশঙ্কা একেবারে ভুল ছিলো তা কিন্তু নয়। চিঠি পাঠিয়ে টিপু সুলতান অটোমান এবং ফরাসি নেতাদের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের কাছে টিপু সুলতান নাম ছিলো এক বিভীষিকা, এক জলন্ত আতঙ্ক। কিন্তু কারন কি?

কারন একটাই আর সেটা হলো টিপু সুলতানেন সাহসিকতা, বীরত্ব, দেশপ্রেম আর বিচক্ষণতা। টিপু সুলতানের অমর সেই উক্তি -“ভেড়া বা শিয়ালের মতো দু’শ বছর বাঁচার চেয়ে বাঘের মতো দু’দিন বেঁচে থাকাও ভালো’ এই কথা থেকেই তা অনুমান করা যায় তার সাহসী চরিত্র।

■ টিপু সুলতান! শের-ই-মহীশূর |
টিপু সুলতান (জন্ম: ২০ নভেম্বর, 1750 – মৃত্যু: 4 মে, 1799 ) ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের মহীশূর রাজ্যের শাসনকর্তা। তিনিএকজন বীর যোদ্ধা ছিলেন। ইংরেজদের বিরুদ্ধে তিনি বীরত্ব সহকারে যুদ্ধ করেন। তিনি তাঁর শৌর্যবীর্যের কারণে শের-ই-মহীশূর (মহীশূরের বাঘ) নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁর অসাধারণ ক্ষীপ্রতা, দক্ষতা, বুদ্ধিমত্তা আর কৌশলপূর্ণ রাজ্য পরিচালনা – বাবার সুযোগ্য উত্তরসূরি ছিলেন টিপু সুলতান। একারনেই শের-ই-মহীশূর; উপাধিটা ইংরেজরাই তাকে দেয়।

টিপু সুলতানের রাজ্যের প্রতীক ছিলো বাঘ। বাঘ ছিলো তাঁর অনুপ্রেরণার মতো।তিনি তৎকালীন শ্রেষ্ঠ কারিগর দিয়ে কাঠের ফ্রেমের উপর সোনার পাত বসিয়ে তার উপর মণিমুক্তা ও রত্নখচিত একটি সিংহাসন বানিয়ে নিলেন, যাকে বরং “ব্যাঘ্রাসন”ই (Tiger throne) বলা যায়। কারণ আট কোণা ঐ আসনটির ঠিক মাঝখানে ছিলো একটি বাঘের মূর্তি। ৮ ফুট চওড়া আসনটির রেলিংয়ের মাথায় বসানো ছিলো সম্পূর্ণ স্বর্ণে তৈরি দশটি বাঘের মাথা, আর উপরে উঠার জন্য ছিলো দুধারে, রূপার তৈরি সিঁড়ি। আর পুরো ব্যাঘ্রাসনটাই ছিলো বাঘের শরীরের মতো ডোরাকাটা।

টিপু সুলতান ইংরেজদের সাথে যুদ্ধে যেসব হাতিয়ার ব্যবহার করেছেন তা ছিলো অত্যন্ত আধুনিক মানের এবং ব্যতিক্রমী। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রথম রকেট প্রযুক্তি ব্যবহার করেন টিপু। সেই যুদ্ধের একটি চিত্র নাসার মেরিল্যান্ড অফিসে সংরক্ষিত আছে।

টিপু সুলতানের চেয়ে একাগ্রচিত্তে আর কেউ মহীশুর রাজ্যকে ব্রিটিশ মুক্ত করতে মরিয়া হয়ে উঠেনি। তার ধ্যানে মনে জাগরণে সবসময় কাজ করতো কিভাবে ব্রিটিশ শাষন থেকে রাজ্যকে বাঁচাবে। এমনিতেই তিনি প্রচন্ড ইংরেজ বিরোধী ছিলেন, তদুপরি 1781 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ সেনাপতি হেক্টর মুনরোর ও তাঁর বাহিনীর কাছে দ্বিতীয় মহীশূর যুদ্ধে টিপু ও তাঁর বাবা মারাত্মক নাজেহাল হন এবং টিপুর রাজ্যে যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতি হয়, নিহত হয় অনেক সৈন্য। এই পরাজয়ে তিনি আরো বেশি তেজদীপ্ত হয়ে ওঠেন।

ঘটনাক্রমে 1793 খ্রিস্টাব্দে হেক্টর মুনরোর একমাত্র পুত্র সুন্দরবনের সাগর দ্বীপে বাঘ শিকার করতে গিয়ে বাঘ আক্রমণে নিহত হয়। এই সংবাদ পেয়ে টিপুর মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে যায়। তিনি এই ধারণা কাজে লাগিয়ে একটি বিচিত্র খেলনা বানিয়েছিলেন, যা সারা দুনিয়ায় “টিপু’স টাইগার” (Tipu’s Tiger) নামে বিখ্যাত হয়ে আছে। ফরাসি যন্ত্রকুশলীদের দ্বারা নির্মিত প্রমাণ আকারের এই খেলনাটিতে ক্লকওয়ার্ক সিস্টেম ব্যবহৃত হয়েছিলো। খেলনায় দম দিয়ে ছেড়ে দিলে এর সাথে লাগনো একটি অর্গান পাইপ থেকে রক্ত হীম করা বাঘের প্রচণ্ড গর্জন, আর এক ইংরেজের প্রচণ্ড গোঙানির আওয়াজ বের হতো। “টিপু’স টাইগার” বানানোর পিছনে একদিকে যেমন ছিলো তাঁর ইংরেজদের প্রতি উষ্মা, তেমনি অন্যদিকে ছিলো প্রচন্ড ব্যঘ্রপ্রীতি। সময় পেলেই তিনি বাঘটিতে দম দিতেন; কখনও কখনও রাতের পর রাত একই জিনিস দেখে গায়ের জ্বালা মেটাতেন।
ফরাসিদের বানানো খেলনা টিপুস টাইগার। যেখানে বাঘ ইংরেজকে কামড়ে দিত টিপু সুলতানের বাঘপ্রীতির প্রমাণ মেলে তার ব্যবহৃত অস্ত্রেও ।

ইংরেজরা টিপুকে কেমন ভয় করে চলতো তার প্রমান মেলে রিচার্ড ওয়েলেসলির কথায়। রিচার্ড ওয়েলেসলি ছিলেন ভারতে ক্রমসম্প্রসারণশীল বৃটিশ সাম্রাজ্যের পরিচালক। 1799 সালের 4 মে ‘মহীশূরের বাঘ’ টিপু সুলতানের মৃত্যু সংবাদ শুনতে পেয়ে তিনি বলেন “গোটা ভারতবর্ষই এখন আমাদের”। এ কথা শুনেই বোঝা যায়, ভারতে বৃটিশ সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণে সবচেয়ে বড় বাধাগুলোর একটি ছিলেন টিপু সুলতান। ভারতের বেশিরভাগ অংশেই আজও তাকে সেভাবেই দেখা হয়।

কিন্তু ইদানিংকালে ভারতীয়দের মধ্যে টিপুকে নিয়ে কিছু ইতিহাস বিকৃতি ছড়ানো হচ্ছে। এটা শুরু হয়েছে বছর তিনেক আগে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে দেশটির কর্ণাটক রাজ্য একটি প্যারেড বের করা হয়, যাতে একদম সম্মুখভাগে ছিলো তরবারি হাতে টিপুর একটি চলমান ভাষ্কর্য। প্রজাতন্ত্র দিবসে ভারতীয় জাতীয়তার প্রতীক হিসাবে টিপুকে গ্রহণ করা যেতে পারে কিনা, তাই নিয়েই উত্তপ্ত আলোচনা শুরু হয় টুইটারে। তাদের যুক্তি টিপুর আমলে হাজার হাজার হিন্দু ইসলাম গ্রহন করে এবং ভারতের হিন্দুদে সংখ্যা এতে অনেক কমে যায়। টিপুর অত্যাচারের স্বিকার হয়ে সাধারণ হিন্দুরা বাধ্য হয়ে ধর্মান্তারিত হয়। কিন্তু ঘটনা সত্যতা কতটুকু!?
আজ থেকে কয়েকশ’ বছর আগে ভারতের কেরালা অঙ্গরাজ্যে হিন্দুদের মধ্যে এক প্রকার ট্যাক্স বা কর প্রচলিত ছিলো। করটির নাম- ‘স্তনকর’ বা ‘breast tax’। এর আরেকটি নাম মুলাককারাম (mulakkaram)।

স্তনকর বা ব্রেস্টট্যাক্স বা মুলাককারাম কি?
ঐ সময় নিয়ম ছিলো শুধূ ব্রাহ্মণ ব্যতিত অন্য কোন হিন্দু নারী তার স্তনকে ঢেকে রাখতে পারবে না। শুধুমাত্র ব্রাহ্মণ শ্রেণীর হিন্দু নারীরা তাদের স্তনকে একটুকরো সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে পারতো, বাকি হিন্দু শ্রেণীর নারীদেরকে প্রকাশ্যে স্তন উন্মুক্ত করে রাখতে হতো। তবে যদি কোন নারী তার স্তনকে কাপড় দ্বারা আবৃত করতে চাইতো, তবে তাকে স্তনের সাইজের উপর নির্ভর করে ট্যাক্স বা কর দিতে হতো। এই নির্মম করকেই বলা হয় স্তনকর বা ব্রেস্টট্যাক্স।
1803 সালে নাঙ্গেলী (Nangeli) নামক এক নারী তার স্তনকে আবৃত করে রাখে। যথন গ্রামের ট্যাক্স কালেকটর তার থেকে স্তনকর চাইতে আসে, তখন নালেঙ্গী তা দিতে অস্বীকার করে এবং নিজের দুটি স্তনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে পাতা দিয়ে মুড়ে ট্যাক্স কালেকটরকে দিয়ে দেয়। তখন কাটা স্তন দেখে ট্যাক্স কালেকটর অবাক হয়ে যায়। স্তন কেটে ফেলার কিছুক্ষন পরেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য নাঙ্গেলীর মৃত্যু হয়। স্ত্রীর মৃত্যু শোকে নালেঙ্গীর স্বামীও সাথে সাথে আত্মহত্যা করে। এই ঘটনার পর থেকেই স্তনকর রোহিত হয়।

তবে স্তনকর রোহিত হলেও দক্ষিণভারতে নারীদের স্তন আবৃত করার জন্য বহু সংগ্রাম করতে হয়েছে। এমনকি বিষয়টি নিয়ে রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা পর্যন্ত করতে হয়েছে তাদের। 19 শতাব্দীর মাঝে এসে যখন কিছু হিন্দু নারী তাদের শরীরের উপরের অংশ আবৃত করার অধিকার দাবি করে, তখন হিন্দু পুরোহিতরা স্পষ্ট করে বলে দেয়, নিচু বর্ণের নারীদের শরীরের উপরের অংশ আবৃত করা ধর্ম বিরোধী। বিষয়টি নিয়ে 1859 সালে দক্ষিণ ভারতে একটি দাঙ্গা সংগঠিত হয়। এই দাঙ্গার উদ্দেশ্য ছিলো হিন্দু নারীদের শরীরের উপরের অংশ আবৃত করার অধিকার আদায় করা। এই দাঙ্গায় ‘কাপড়ের’ দাঙ্গা হিসেবেও পরিচিত।

ইদানীং কেউ কেউ বলার চেষ্টা করেন- টিপু সুলতান নাকি তরবারির ভয় দেখিয়ে অনেক হিন্দু নারীকে মুসলিম বানিয়েছিলেন। কিন্তু ইতিহাস বলছে ভিন্ন কথা। ইতিহাস বলছে, ঐ সময় টিপু সুলতান হিন্দুদের বর্ণপ্রথার এই অন্যায় রীতিকে  মোটেও পছন্দ করেননি। তিনি চেয়েছেন এই নগ্নতা বন্ধ হোক। তিনি হিন্দু নারীদের আহবান করেছিলেন-

“যদি তোমরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করো, তবে কাপড় পরার অধিকার পাবে।” – টিপু সুলতানের এ কথা শুনে হাজার হাজার হিন্দু নারী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলো।

এ সম্পর্কে হিন্দু ইতিহাসবিদ সুরজিত দাসগুপ্ত বলে- “ঐ সময় হিন্দু নিম্নবর্ণের লোকদের উর্ধাঙ্গ অনাবৃত রাখতে হত। সে সময় ভারতবর্ষের কেরালাতে অমুক হিন্দু নারী ইসলাম গ্রহণ করেছে এটা বলার প্রয়োজন ছিলো না, বলতে হতো শুধু ‘কুপপায়ামিডুক’ শব্দখানা। এ শব্দখানার অর্থ ‘গায়ে জামা চড়িয়েছে’। (সূত্র: বই-সুরজিত দাসগুপ্তের ‘ভারতবর্ষ ও ইসলাম’, পৃষ্ঠা: ১৩০-১৩১)

ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করছে বিজেপি ।
‘কাউন্টার কারেন্টস’ এ প্রকাশিত এক লেখায় সুভাষ গাতাদি দাবি করেন, কর্ণাটকের উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী টিপু বিদ্বেষ ছড়িয়ে রাজনৈতিক সুবিধা আদায় কররা চেষ্টা করে। এই উগ্রবাদী শক্তিগুলোর রাজনীতির রূপ আবার নানা রকম। বছর পাঁচেক আগের কথা ধরা যাক। কর্ণাটক রাজ্যের বিজেপি থেকে বেরিয়ে গিয়ে কর্ণাটক জনতা পক্ষ নামের এক দল খোলেন হিন্দুত্ববাদী নেতা বি.এস. য়েদ্দিউরুপ্পা। নির্বাচনী প্রচারণার সময় মুসলিম ভোটারদের কাছে নিজেকে তুলে ধরতে অন্য রকম এক পদক্ষেপ নেন য়েদ্দিরুপ্পা। টিপু সুলতানের সেই বিখ্যাত তলোয়ার এবং তাঁর রণকৌশলের অনুকরণে এক সুন্দর মহড়া বা ‘সোর্ড ড্যান্স’-এর আয়োজন করেন তিনি।

এরপর গঙ্গায় অনেক জল বয়ে গেছে। নির্বাচনের বৈতরণী পেরিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন তিনি। 2014 সালে নিজের গড়া দল নিয়ে ফের ভিড়েছেন বিজেপিতে। গদিতে বসার পরপরই রাজ্যের জনপ্রিয় উৎসব ‘টিপু জয়ন্তী’ বন্ধের উদ্যোগ নেন তিনি। এ লক্ষ্যে জোর জনসংযোগও শুরু করেন। ভারতের রাজনীতিতে ধর্মভিত্তিক বিভেদ যতই জোরালো হচ্ছে, ততই জোরালো হচ্ছে টিপু বিদ্বেষ।
কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী দল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) ও সত্তরের দশকে টিপু সুলতানের নামে এক জীবনী প্রকাশ করে, যেখানে তাঁর নামে কোনো ধরনের নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয়নি। টিপু ইস্যুতে আরএসএসের অবস্থান এখন প্রায় উল্টো।
ঊনবিংশ শতাব্দীর একেবারে শুরুর দিকে অর্থাৎ টিপু সুলতানের মৃত্যুর পরপরই অনেকগুলো লোকসংগীত ও শোকগাঁথা রচিত হয়, যা কালের ধারাবাহিকতায় এখনও জনপ্রিয়। কর্ণাটকের লোকসাহিত্যের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ব্রিটিশবিরোধী হাতেগোনা কিছু গোত্রপতি ছাড়া আর কোনো সম্রাটকে নিয়ে কর্ণাটকে শোকগাথা রচিত হয়নি। আর এই শোকগাথা বা ‘লাভানা’গুলোর জনপ্রিয়তাই এই নেতার গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে ইঙ্গিত দেয়।

■ অবশেষে টিপু সুলতান জয়ন্তী নিষিদ্ধ করলো বিজেপি ।
ক্ষমতায় এসেই বিজেপি সরকার কর্ণাটকে বাতিল করল টিপু সুলতানের জন্মজয়ন্তী ৷ যা নভেম্বর মাসে পালন করার কথা ছিল ৷ মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা নির্দেশ দিয়েছে কন্নড় সংস্কৃতি দফতরকে- যেন টিপুর জন্মদিন পালন না করা হয়৷ গত সোমবারে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর৷
বিজেপি বিধায়কর বোপাইয়ার আবেদনের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷ যেখানে কর্ণাটক সরকার প্রতি বছরই টিপু সুলতানের জন্ম জয়ন্তী পালন করে থাকে এবং তা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই বিজেপি বার বার প্রতিবাদ করে আসছে৷
২০১৫ সালে সিদ্ধারামাইয়া সরকার টিপু সুলতান জয়ন্তী পালন করা শুরু করেন যা প্রতি বছর নভেম্বর মাসে পালন করা হচ্ছিল৷ গত কয়েক বছর বিজেপি টিপু জয়ন্তী পালনের বিরোধিতা করে প্রতিবাদ করেন যা সিদ্ধারামাইয়া নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার পালন করছিল৷ তবে জেডিএস মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী যদিও তার পূর্বসূরীরর মতো এই রকম টিপু জয়ন্তী পালনে সক্রিয় ভাবে অংশ নেননি ৷

বিজেপি বিধায়ক বোপাইয়া প্রতিবাদ করে এই টিপু জয়ন্তী পালন নিষিদ্ধ করার দাবি তোলেন ৷ গেরুয়া দলের অভিমত, টিপু ছিলেন স্বৈরাচারি তাই কোনও কারণ নেই যে মহীশূরের ওই রাজার জন্মজয়ন্তী পালন করার৷ যদিও কংগ্রেস এবং জেডিএস বিজেপির এমন আচরণের তীব্র সমালোচনা করে উল্টে টিপুর পক্ষে সওয়াল করেছে৷

THANK YOU ALL.
A N I .

No comments

Powered by Blogger.