মিলাদ'এর গ্রহণযোগ্যতা এবং মাস‌আলা

মিলাদ'এর গ্রহণযোগ্যতা এবং মাস‌আলা

Acceptance and Masala of Milad


ইসলামের মৌলিক ভিত্তি হলো কুরআন, হাদীস। এর বাইরে উপাসনার নামে কোন কিছু করলে সেটা হবে বিদ‘আত ও গোমরাহী। ইসলাম ধর্মে মনগড়া মতবাদের কোনো জায়গা নেই। ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা,ইসলাম একটি পরিপূর্ণ ধর্ম, এখানে আপনার আমার সাজিয়ে, বানিয়ে কোনো কিছু বলার করার সুযোগ নেই। 

হাদীস শরীফে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “প্রত্যেক বিদ‘আত গোমরাহী, আর প্রত্যেক গোমরাহী জাহান্নামে টেনে নিয়ে যাবে।” (সুনানে নাসায়ী, হাদীস নংঃ ১৫৭৮)। এর অর্থ নতুন করে কোনো কিছু করার সুযোগ ইসলামের বিধানে নেই। 


✓ মিলাদ মাহফিল 
মিলাদ এর আভিধানিক অর্থ জন্ম, জন্মকাল ও জন্ম তারিখ। পরিভাষায় মিলাদ বলা হয় রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা বা জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনার মজলিস।


আমাদের দেশে প্রচলিত মিলাদ বলতে বোঝায় ঐ সব অনুষ্ঠান, যেখানে মওজু’ রেওয়ায়েত সম্বলিত তাওয়ালূদ পাঠ করা হয় এবং অনেক স্থানে দুরূদ পাঠ করার সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মজলিসে হাজির-নাজির হয়ে যান-এই বিশ্বাসে দাঁড়িয়ে যাওয়া। এসব করা হলে মূলত সেটাকে মিলাদ মাহফিল মনে করা হয়, তাতে রাসূলের জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা হোক বা না হোক। 

পক্ষান্তরে এসব ছাড়া অর্থাৎ তাওয়ালূদ, সমস্বরে ভুল দরূদ তথা ইয়া নবী সালা-মালাইকা... এবং কেয়াম করা না হয় এবং দুই হাত বুকের উপর বেঁধে হেলেদুলে দরূদ পাঠ করা না হলে সেটাকে মিলাদ মনে করা হয় না।

✓ মিলাদের মাস‌আলা
মিলাদ বলতে যদি এই অর্থ হয় যে, রাসূলের জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা, তাহলে নিঃসন্দেহে তা কল্যাণ ও বরকতের বিষয়। কিন্তু যদি প্রচলিত অর্থ উদ্দেশ্য হয়, যা উপরে উল্লেখ করা হলো, তাহলে তা হবে কুরআন সুন্নাহ'র দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ বিদ‘আত ও গোমরহী।


কেননা শরী‘আতের ভিত্তি যে চারটি বিষয়ের উপর তথা কুরআন, হাদীস, ইজমা ও কিয়াস, এই চারটির কোনটি দ্বারা উক্ত মিলাদ প্রমাণিত নয়। এবং কোনো কালেও কোনো আলেম সমাজ সেটাকে সমর্থন করেনি। 

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাদেরকে সত্যের মাপকাঠি বলেছেন এবং যাদের যুগকে সর্বোত্তম যুগ বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং যাদের আদর্শকে আঁকড়ে ধরতে বলেছেন তারা হলেন সাহাবায়ে কেরাম। তাদের কারো থেকে এই ধরনের মিলাদ প্রমাণিত নেই। তাদের কারো যুগেও এর অস্তিত্ব ছিল না। 


চার মাযহাবের ইমামগণের কারো যুগেও তার অস্তিত্ব কিংবা প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এক কথায় রাসূলের যুগ থেকে দীর্ঘ ছয়শত (৬০০) বছর পর্যন্ত এর কোন অস্তিত্ব ছিল না। এটি মূলত ৬০৪ হিজরীতে সূচনা হয়।


এখনও গ্রামে গ্রামে অনেক মসজিদে শুক্রবার জুমার নামাজের পর এর আয়োজন করা হয়। কিছু কিছু মুরুব্বিগণ শুধুমাত্র রেওয়াজ রক্ষা করার জন্য‌ই এইসব করে থাকে। তাদের কারো কারো মতে, এটা বাপ দাদার যুগ থেকেই করে আসছে,কৈ কেউ তো নিষেধ করেনি তাই এখনও করতে হবে কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।



No comments

Powered by Blogger.