কুস্তি যখন কৌশল

 

tricks-when-wrestling


লোকটার নাম রুকানা। লোকটার পিতার নাম আবদে ইয়াযীদ। কুরাইশ বংশের পালোওয়ান হিসেবে প্রসিদ্ধ। একদিন মক্কার এক উপত্যকায় তার সাথে নবীজীর দেখা। সে সময় নবীজী পুরো দস্তুর দাওয়াতের কাজ করছেন। দিনে রাতে মিলে মিশে মানুষকে ডেকে চলছেন ইসলামের দিকে।


রুকানাকে পেয়ে নবীজী সা: বললেন, ‘রুকানা! তোমার কি আল্লাহর ভয় নেই, আমার দাওয়াত কবুল করছো না কেন?’রুকানা উত্তর দিলো, ‘আমার যদি দৃঢ় বিশ্বাস হয়ে যায় যে তোমার কথাগুলো সত্য, তাহলে অবশ্যই তোমার অনুসরণ করবো।’ রাসূলুল্লাহ সা: তাকে একটা প্রস্তাব দিলেন। 


বললেন, ‘যদি আমি তোমাকে কুস্তিতে হারিয়ে দিই তবে কি আমার কথাকে সত্য মনে করবে?’রুকানার চোখ কপালে উঠে গেলো। মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কিনা তাকে কুস্তির আহ্বান করছেন। চরম অবাক হওয়া সত্ত্বেও সে কুস্তিতে সম্মত হলো। 


শর্ত রইলো, কুস্তিতে পরাজয়বরণকারী বিজেতাকে দেবে একশ’ ভেড়া।রুকানা উঠে দাঁড়ালো কুস্তির জন্যে। আর চোখের পলকে তাকে ধরাশায়ী করে ফেললেন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাকে সম্পূর্ণ পরাভূত করে তার ওপর চেপে বসলেন। রুকানার বিশ্বাস হচ্ছে না। 


সে আরো একশ’ ভেড়ার শর্তে আবার কুস্তির আহ্বান করলো। নবীজী এবারও তাকে ধরাশায়ী করলেন।রুকানা আশ্চর্যের সাথে বলতে লাগলো, মুহাম্মদ! তুমি আমাকে ফেলে দিচ্ছো! কিন্তু রুকানা তখনও বিষয়টা ভালোভাবে বুঝে উঠতে পারেনি। সে আরেকবার নবীজীকে আহ্বান করলো। 


একশ’ ভেড়ার শর্ত রইলো এবারও। তৃতীয় বার নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে কুপোকাত করার পর সে বলতে লাগলো, মুহাম্মদ! আপনার পূর্বে কেউ আমার পিঠ জমিনে ছোঁয়াতে পারেনি।রুকানার ভাষায় মুহাম্মদ সা: ছিলেন তার কাছে সবচেয়ে অপছন্দের ব্যক্তি। 


কিন্তু এই ঘটনার পর তিনি হয়ে গেলেন সবচেয়ে প্রিয় মানুষ। তাই দেরি না করে রুকানা দীক্ষিত হলেন প্রিয় মানুষের ধর্মে। নবীজীও এ নওমুসলিমের সাথে চমৎকার আচরণ করলেন। তার কাছ থেকে পাওনা ভেড়াগুলো দিয়ে দিলেন তাকেই। আলহামদুলিল্লাহ।

No comments

Powered by Blogger.