নবীর প্রেমের পাগলপণ

 

madness-prophets-mohammed-love



নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের কয়েক দিন আগে তিনি একটি বাহিনী প্রস্তুত করলেন। নেতৃত্বে ছিলেন হযরত উসামা বিন যায়েদ রাযিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু। সৈনিক হিসেবে আছেন আবু বকর, হযরত উমর রাযিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুম -এর মত মহান সাহাবীরা।


বাহিনী প্রস্তুত হলো। ফিলিস্তীনের উদ্দেশে রওয়ানা হবে। কিন্তু তার আগেই ইন্তেকাল হয়ে গেলো নবীজীর। স্থগিত হলো বাহিনীর অভিযাত্রা। সাহাবায়ে কেরাম ব্যস্ত হলেন রাসূলের কাফন দাফনে। 


নবীজীর কাফন দাফন শেষ হলো। খলীফাতুল মুসলিমীন আবু বকর সিদ্দীক রাযিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু কাফেলাকে রওয়ানা হতে আদেশ করলেন। আশ্চার্যান্বিত হলেন সাহাবায়ে কেরাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকাল পরবর্তী সংকটময় মুহূর্ত। 


এ অবস্থায় কি মদীনাকে খালি করা ঠিক হবে? আপত্তি জানালেন তারা। হযরত উমর রা.ও এ আপত্তির সাথে একমত।


আবু রা. বকর নিজ সিদ্ধান্তে অটল। তিনি অবশ্যই রওয়ানা করবেন কাফেলাকে। তার কথা হলো, ‘এই বাহিনী প্রস্তুত করেছেন স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। রওয়ানা করাবার ইচ্ছেও তাঁর ছিলো। সুতরাং রাসূলের ইচ্ছে অবশ্যই পূরণ করতে হবে। 


এতে কোনো ধরণের প্রতিবন্ধকতা গ্রাহ্য করা হবে না।’ কাফেলা রওয়ানা হলো। ময়দানে শত্রু বাহিনীর সাথে মোকাবিলাও হলো। যুদ্ধ শেষে বিজয়ী বেশে প্রত্যাবর্তন করলো তারা।


আরো কিছু এলাকার কাফেররা রাসূলের ইন্তেকালকে সুবর্ণ সুযোগ মনে করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলো। এ বাহিনীর তড়িৎ পদক্ষেপ দেখে তারাও ভয় পেয়ে গেলো। ষড়যন্ত্র থেকে নিবৃত হলো ওরা।


হযরত ওমর রা: 

লোক দেখানোর জন্যে ঈমান এনেছে, অথচ অন্তরে বিশ্বাস নেই, এর নাম হলো মুনাফিক। নবীজীর সময়ে মদীনার বেশ কিছু লোক স্বার্থ হাসিলের জন্যে বাহ্যিকভাবে মুসলমান হয়েছিলো। কিন্তু অন্তরে তারা ছিলো পাক্কা বেঈমান।


রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক মুনাফিককে চিনতেন। কিন্তু তাদের পরিচয় কখনো সাহাবায়ে কেরামের সামনে প্রকাশ করেননি। তবে একজনকে নবীজী মুনাফিকের পূর্ণ তালিকা জানিয়েছিলেন। তিনি হচ্ছেন, হযরত হুযাইফা রাযিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু।


মদীনায় কোনো লোক ইন্তেকাল করলে সাহাবায়ে কেরাম লক্ষ করতেন, হযরত হুযাইফা সে জানাযায় অংশগ্রহণ করছেন কি না! তিনি নামাযে শরীক হয়েছেন মানে সে ব্যক্তি মুনাফিকের তালিকায় নেই। আর যদি তিনি শরীক না হয়ে থাকেন, তাহলে মৃতব্যক্তি মুনাফিকের তালিকাভুক্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে।


একবার হযরত উমর রাযিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু হযরত হুযাইফা রাযিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু এর কাছে গেলেন। বললেন, হুযাইফা, আল্লাহর দোহাই! বলুন না আমার নাম কি মুনাফিকের তালিকায় আছে? আশ্চর্য! হযরত উমর নিজের ব্যাপারে মুনাফিক হওয়ার আশঙ্কা করছেন। 


অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ব্যাপারে ইরশাদ করেছেন, উমর জান্নাতী। আর হযরত উমর ভাবছেন, হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন এই সুসংবাদ প্রদান করেছেন তখন হয়ত আমার আমল ভালো ছিলো। কিন্তু এমনওতো হতে পারে, সুসংবাদের পর কোনো বদআমলের কারণে মুনাফিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছি।



No comments

Powered by Blogger.