গনডায় জ্ঞান

 

knowledge-hopeless



এক ধান ব্যবসায়ী বাজারে যাচ্ছে ধান বিক্রি করতে। তার কর্মচারী একটা লম্বা কাঠের দু’ মাথায় দুটো টুকরি ঝুলিয়ে সেটা কাঁধে বহন করে নিয়ে যাচ্ছে। টুকরি দুটো ধানে ভর্তি। বাজারে যাওয়ার পথেই অর্ধেক ধান বিক্রি হয়ে গেলো। একপাশের টুকরি খালি হয়ে গেছে। 


সে পাশটা হালকা হয়ে যাওয়ায় কর্মচারীটির বহন করতে কষ্ট হচ্ছে। বাজারে পৌঁছুতে এখনো বেশ বাকি। অনেক ভেবে লোকটা রাস্তা থেকে কিছু ইট পাথর সংগ্রহ করে খালি টুকরিটায় রেখে দিলো। এতে করে আবার দু’পাশের ভার সমান হয়ে গেলো। এক জ্ঞানী ব্যক্তি এ অবস্থা দেখে খুবই আশ্চর্য হলেন। 


তিনি এগিয়ে এসে লোকটাকে বললেন, ‘আপনার কর্মচারী তো শুধু শুধুই কষ্ট করছে। একপাশের ধান অর্ধেক করে খালি টুকরিটায় দিলেই তো দু’দিকের ভার সমান হয়ে যায়। লোকটা ভেবে দেখলো, তাইতো। তাড়াতাড়ি ইটগুলো ফেলে একপাশের টুকরি খালি করে সেটাতে অন্যপাশ থেকে অর্ধেক ধান রাখলো। 


বাহ, দুপাশের ভারই সমান। আবার ইটের বোঝা কমে যাওয়ায় অনেক হালকাও হয়ে গেছে। কাজটা করার পর লোকটি জ্ঞানী ব্যক্তিটির সীমাহীন শুকরিয়া আদায় করলো। হঠাৎ তার মনে হলো, এতো কম বুদ্ধির অধিকারী হওয়া পরও তো আমার মোটামুটি ভালোই ধন-সম্পদ আছে। 


তাহলে এই জ্ঞানী ব্যক্তিটির নিশ্চয়ই আরো অনেক সম্পদ আছে। সে নিশ্চয়ই আমার চাইতেও বড় ব্যবসায়ী। ভাবতে ভাবতে লোকটা জ্ঞানী ব্যক্তিকে প্রশ্নই করে বসলো, জনাব, আপনার কর্মচারীরা মাল বহন করার সময় কি এই পদ্ধতিই অবলম্বন করে? জ্ঞানী ব্যক্তি উত্তরে বললেন, ‘না জনাব, আল্লাহ আমাকে ভালোই রেখেছেন। 


তবে আপনি যেমন ভাবছেন তেমন প্রাচুর্যে ভরা জীবন আমার নয়। আমি কোন ব্যবসায়ী নই এবং আমার কোন কর্মচারীও নেই। বরং আমি এক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করি। জ্ঞানী ব্যক্তির কথা শুনে ধান ব্যবসায়ী আতকে উঠলো। তার মুখ থেকে আনমনেই বের হয়ে গেলো, ‘বলেন কী, আপনার জ্ঞান তাহলে কী কাজে লাগলো! 


সেটাতো দেখছি আপনাকে ধনী বানাতে পারেনি। আপনার কাছ থেকে বুদ্ধি নিলে আমাকেও দরিদ্র হয়ে যেতে হবে। ব্যবসায়ী কথাগুলো বলতে বলতেই খুব দ্রুত ধানগুলো একপাশের টুকরিতে নিয়ে খালি টুকরিতে আবার ইট-পাথর তুলে নিলো। 

No comments

Powered by Blogger.