ইসলাম ধর্মে মূর্তি ও ভাস্কর্যের বিধি বিধান
ইসলামী শরী‘আতের দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি ও ভাস্কর্য সম্পর্ণূরূপে হারাম ও নিষিদ্ধ, এটা জায়েয হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাই গতানুগতিক ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ধর্মের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যারা এসব প্রতিকৃতি তথা ছবি প্রস্তুত করবে তাদেরকে কিয়ামতের দিন বলা হবে, তোমরা যা সৃষ্টি করেছ তাতে জীবন দাও। (সহীহ বুখারীঃ ৫৯৫৯)
ইসলামি শরিয়াহ্ মতে, পূজার মূর্তি দুই কারণে হারাম, প্রথমত প্রাণীর প্রতিকৃতি হওয়ার করণে, দ্বিতীয়ত পূজা করার কারণে।
সাধারণ ভাস্কর্য হারাম হওয়ার কারণ,
✓ সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে কোন প্রাণীর ভাস্কর্য তৈরি করা হারাম, এটা প্রাণীর প্রতিকৃতির কারণে নয়; বরং ভাস্কর্য নির্মাতার দাম্ভিকতার কারণেই, কারণ যখন একজন শিল্পী অতি সুন্দর কোনো ভাস্কর্য নির্মাণ করে তখন তার মনের ভেতর বড় ধরনের অহংকার কিংবা দাম্ভিকতা সৃষ্টি হতেও পারে, নিজের ভেতর প্রভূত্ববোধ আসতেও পারে তাই এই সম্ভাবনা থেকেই এটি নির্মাণ করা হারাম। কেননা ইসলামে দাম্ভিকতা, অহংকার দুটোই নাজায়েজ আর নিজের ভেতর প্রভূত্ববোধ সেটাতো ঈমানহারাই করে দেবে।
✓ যদি স্মরণ ও সম্মানের উদ্দেশ্যে বানানো হয়, তাহলে এটা যেমন প্রাণীর ছবি হওয়ার কারণে হারাম, তেমনি এ কারণেও যে, এভাবে কোন ছবির সম্মান দেখানো এক ধরণের ইবাদত বলেই গণ্য হবে আর আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করা হারাম।
✓ অতীতে অনেক জাতিসমূহকে স্মারক ভাস্কর্য প্রস্তুত করার মাধ্যমে শিরকে লিপ্ত করিয়ে ছিল শয়তান। কেননা পূর্ববর্তী উম্মতসমূহের মাঝে এধরণের স্মারক ভাস্কর্য থেকেই পূজার মূর্তির সূচনা হয়ে শিরকের অনুপ্রবেশ ঘটেছিল।
✓ অনেক শিল্পীই শুরুতে ভালো ভাস্কর্য বানালেও ধীরে ধীরে অশ্লীলতার দিকে ধাবিত হতে থাকে। নগ্ন নারী, কিংবা পুরুষের চেয়ে নারীর ভাস্কর্যের প্রতি প্রভাবিত হতে থাকে। এভাবেই সমাজে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়ের সময় বাইতুল্লাহ ও তার চারপাশ থেকে সব ধরণের মূর্তি অপসারণ করে ছিলেন এবং সকল মূর্তি ও ভাস্কর্য বিলুপ্ত করে ছিলেন এবং সাহাবায়ে কেরাম (রা.)দেরকে সব ধরণের প্রতিকৃতি মিটিয়ে ফেলার আদেশ করে ছিলেন। বিভিন্ন স্থানে খোদাই করা ছবিসমূহ সাহাবায়ে কেরাম রা. ভেজা কাপড় দিয়ে ঘষে ঘষে সমান করে দিয়েছিলেন। অনেক খোদিত চিত্র মাটির লেপ দিয়ে তার উপর রং লাগিয়ে দিয়েছিলেন। (বুখারী হা.২৪৭৮,৪২৮৭,৪৭২০,৪২৮৮, মুসলিম হা.১৭৮১,)
No comments