সম্মিলিত দোয়া মুনাজাতের তাৎপর্য এবং শরিয়ী বিধি বিধান

shariah-rules-prayer



সকলের জন্য দু‘আ করা অপরিহার্য। ফরয নামাযের পরে হোক বা অন্য যে কোনো সময় হোক। যারা দু‘আ করবে না তারা আল্লাহ তা‘আলার ক্রোধের পাত্র হবে। আল্লাহ তাদের উপর নারাজ হয়ে যান। 


পবিত্র কুরআন মাজীদে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন: ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব। নিশ্চয় যারা অহংকার বশত: আমার ইবাদত (অর্থাৎ আমার কাছে দু‘আ করা) থেকে বিমুখ হয় বা মুখ ফিরিয়ে নেয় তারা অবশ্যই লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। সুরা মুমিনঃ৬০, তাফসীরে ইবনে কাছীর:৭/১৫৩)


মুনাজাত কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা নিম্নে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস গুলো থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়,,
✓ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন: ‘নিশ্চয় দু‘আ ইবাদত।’  (মুসনাদে আহমাদ হা. নং ১৮৪১৬)
✓ রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘দু‘আ হলো ইবাদতের মূল। (সুনানে তিরমিযী হা. নং ৩৩৭১)
✓ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেন: ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার নিকট দু‘আ করে না, আল্লাহ তা‘আলা তার উপর নারাজ হন। 
(সুনানে ইবনে মাজাহ:হা. নং ৩৮২৭ , তিরমিযী হা. নং ৩৩৭৩)


∆ সম্মিলিত মুনাজাত দুই ভাবে হতে পারে
১. সমবেত লোকদের মধ্যে একজন দু‘আ করবে এবং অন্যরা আমীন বলবে।
২. একস্থানে সমবেত হয়ে সবাই একাকিত্বে দু‘আ করবে।


উপরে উল্লেখিত উভয় পদ্ধতিই শরিয়ত সম্মত এবং জায়িয। এ ব্যাপারে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম  এর আমল ও নির্দেশ বিদ্যমান। হাদীস শরীফে সম্মিলিত মুনাজাতের গুরুত্বের কথা বহুবার বলা হয়েছে। ফিকহের কিতাবসমূহেও ইমাম-মুক্তাদির সম্মিলিত মুনাজাতকে মুস্তাহাব বলা হয়েছে।


∆ সম্মিলিত মুনাজাতের তাৎপর্যে কয়েকটি হাদীস
✓ আসওয়াদ আমেরী তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে ফজরের নামায আদায় করলাম, যখন তিনি সালাম ফিরিয়ে ঘুরে বসলেন, তখন উভয় হাত উঠিয়ে দু‘আ করলেন । (ইলাউস সুনান হা. নং ৯৩৭ )

✓ হযরত হাবীব ইবনে মাসলামা রা. বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন: ‘যদি কোন দল একত্রিত হয়ে তাদের একজন দু‘আ করে থাকে আর অপররা ‘আমীন, আমীন’ বলে থাকে তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তাদের দু‘আ অবশ্যই কবুল করেন।’ (মুস্তাদরাক হাকেম: ৫৪৭৮)


✓ হযরত সালমান রা. বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম  ইরশাদ করেছেন: ‘যদি কোন জামা‘আত কোন বিষয় প্রার্থনা করার জন্য আল্লাহ তা‘আলার দরবারে হাত তুলে আল্লাহ তা‘আলার উপর ওয়াজিব হয়ে যায় যে, তিনি তাদের প্রার্থিত বস্তু তাদের হাতে দিয়ে দিবেন ।’ (সুনানে আবূ দাউদ: হা. নং ১৪৮৮)


আমাদের যার যা কিছু প্রয়োজন আমরা আল্লাহর কাছে চাইবো। সব কিছু দেওয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। মন প্রাণ খুলে আল্লাহর কাছে আকুতি মিনতি করে চাইলে আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই আপনার দোয়া কবুল করবেন। একাকিত্বে হোক,আর সম্মিলিত ভাবে হোক মুনাজাতের তাৎপর্য অপরিসীম। একমাত্র মুনাজাতের মাধ্যমেই আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়।


No comments

Powered by Blogger.