আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড || কোনটি নিরাপদ? কোনটি বিপদজনক ||
আপনার মোবাইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক, এটা আপনি যেমন কামনা করছেন তেমনি মোবাইল কম্পানি গুলোও এনিয়ে বেশ তৎপর। সবাই নিজেদের গ্রাহকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে কিন্তু তার পরও আপনার ফোন কতটুকু নিরাপদ সেটা আপনাকেই বিবেচনা করতে হবে।
এতো এতো অঙ্গীকারের পরও আপনি যদি শংকিত হয়ে থাকেন, তাহলে মোবাইল ফোন কেনার আগে ভালো করে ভেবে দেখুন,কোনটি বিপদজনক আর কোনটি নিরাপদ, একটু সময় নিয়ে পড়তে থাকুন,
১. থার্ড পার্টি অ্যাপ ও ভিপিএন
উভয় অপারেটিং সিস্টেমই ভিপিএনসহ থার্ড পার্টি সিকিউরিটি অ্যাপ চালানোর অনুমতি দেয়। আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড, উভয়ই জনপ্রিয় ও দরকারি সুরক্ষা অ্যাপগুলো চালানোর অনুমতি প্রদান করে। এখানে উভয়েই অভিন্ন।
✓ আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েডকে সুরক্ষিত রাখার জন্য অ্যাপল এবং গুগল ধারাবাহিকভাবে নিজস্ব ওএস-এর আপডেট নিয়ে আসে।
✓ অ্যান্ড্রয়েড গুগলের প্রোডাক্ট হওয়ায় সব অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসকে একই স্তরের নিরাপত্তা এবং ধারাবাহিক আপডেট সরবরাহ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
২. উভয়ের ডিভাইস ও আপডেট যেমন
✓ অ্যান্ড্রয়েডের উন্মুক্ত স্বভাবের কারণে এটি সবগুলো ডিভাইসেই ইনস্টল করা যায়। ফলে কিছু ডিভাইস অ্যান্ড্রয়েডের সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে সমন্বিত হলেও কিছু ডিভাইসে দুর্বলতা থেকে যায়।
✓ অ্যাপলের ডিভাইস এবং এর আইওএস এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ফলে ডিভাইসের ফিচারগুলো অ্যান্ড্রয়েড ফোনের তুলনায় বেশ সীমাবদ্ধ। যার কারণে এলোমেলো হওয়ার ঝুঁকি ঝামেলা কম থাকে।
৩. উভয়ের অ্যাপ সোর্সিং
✓ অ্যাপল তাদের অ্যাপ স্টোরে থাকা সব অ্যাপগুলো নিখুঁতভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে থাকে। ফলে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে অ্যাপের সংখ্যা কম হলেও ক্ষতিকর অ্যাপ নেই বললেই চলে। প্রায় সবগুলোই নিরাপদ।
✓ অ্যান্ড্রয়েডের প্লে-স্টোরে অ্যাপের পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা হয় না বলে ক্ষতিকর অ্যাপও থাকতে পারে। ফল স্বরুপ, হ্যাকারদের পক্ষে ক্ষতিকর অ্যাপের সাহায্যে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের নিরাপত্তা লঙ্ঘন করা সহজ হয়ে যায়।
৪. উভয়ের সোর্স কোড
✓ অ্যাপল তাদের সোর্স কোড রক্ষা করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার সঙ্গে। সোর্স গুলো পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে দেখা হয়।একারণেই আইফোন হ্যাকারদের জন্য কম আকর্ষণীয়। আর অ্যান্ড্রয়েডকে হ্যাকারদের লক্ষবস্তুতে পরিণত করেছে।
✓ অ্যান্ড্রয়েডের বেশির ভাগ ওএস তৈরি হয় ওপেন-সোর্স থেকে। সেখান ভালো করে বিশ্লেষণ করার সুযোগ কম থাকে, সেক্ষত্রে অ্যাপল কিছুটা হলেও এগিয়ে।
৫. জনপ্রিয়তায় কে এগিয়ে?
✓ অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর মধ্যে ছিল ৮৬.২ শতাংশ। এতো বেশি ব্যবহারকারীর অনেক কারণ রয়েছে যেমন, সহজলভ্যতা, দামে সস্তা, ফাইল আদান-প্রদান সহজ হওয়ায়, ইত্যাদি।
✓ আইওএস ব্যবহারকারী ছিল ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর মধ্যে ১৩.৮ শতাংশ। আইওএস অপারেটিং সিস্টেমের এতো কম ব্যবহারকারী হওয়ারও কিছু কারণ রয়েছে, উচ্চমূল্য হওয়ায়, হাতের নাগালে না পাওয়ায়, ফাইল আদান-প্রদানের সমস্যা হওয়ায়।
৬. উভয়ের ঝুঁকি এবং দুর্বলতা
✓ আইওএস অবশ্যই অ্যান্ড্রয়েডের চেয়ে বেশি নিরাপদ। অ্যাপলের গোপন নির্মাণশৈলীর ফলে তাদের অপারেটিং সিস্টেমে হ্যাকারদের প্রবেশ আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে।
✓ অ্যান্ড্রয়েড হ্যাকারদের জন্য দুর্বলতা শনাক্ত করা এবং ম্যালওয়্যার তৈরি করা সহজ, যার ফলে হুমকির মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং অ্যান্ড্রয়েড ফোন হ্যাক করা সহজ হয়ে যায়।
অবশেষে,
জনপ্রিয়তায় অ্যান্ড্রয়েড এগিয়ে থাকলেও নিরাপত্তায় কে এগিয়ে তা জানা দরকার। অর্থাৎ গ্রাহকদের সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে সামর্থ্য যে রাখে তাকেই এগিয়ে রাখতে হবে। এটাই শেষ কথা।
No comments